Categories
Daily Update

ঢাই আখর প্রেম-রাষ্ট্রীয় সাংস্কৃতিক জত্থার চান্দেরিতে আগমন

हिन्दी | English | বাংলা | ಕನ್ನಡ | മലയാളം

জত্থায় অংশগ্রহণকারী শিল্পীরা চান্দেরির তাঁতি শিল্পীদের সঙ্গে সংলাপ স্থাপন  করেন

দেশব্যাপী প্রেম,সদ্ভাব ও একতার বার্তা নিয়ে ঢাই আখর  প্রেম সাংস্কৃতিক যাত্রার আগমন ৪ঠা অক্টোবর অশোক নগর, চান্দেরিতে হয়৷ এই যাত্রার  সূচনা ভগৎ সিংহের জন্মদিন ২৮শে সেপ্টেম্বর,২০২৩ থেকে  হয় যার পরিসমাপ্তি ঘটবে ৩০শে জানুয়ারি মহাত্মা গান্ধীর শহীদ দিবসে।চান্দেরি একটি ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ শহর ও শ্রমের সাথে শতাব্দী থেকে  অঙ্গাঙ্গী ভাবে জড়িয়ে আছে৷চান্দেরি তাঁতি ও শ্রমিকদের কেন্দ্র স্থল।তাঁতি ভাই কবীরের  চরখায়  বোনা শ্রম ও প্রেমের বার্তা উনার দোহাকে  (কবিতাকে)  পাথেয় করে সেই বার্তা আমরা এই সাধারণ  মেহনতী তাঁতি ও শ্রমিকদের কাছে পৌঁছে দিয়েছি ও ওদের সাথে কথোপকথন করেছি।

শহরের মধ্যস্থলে স্থিত জয়স্তম্ভ পার্ক থেকে এই যাত্রার শুভারম্ভ হয়।এখানে বিনীত তিওয়ারী  যাত্রার উদ্দেশ্য সম্পর্কে সবাইকে অবগত করান ও বিস্তারিত আলোচনা করেন।।এরপরে জত্থা হ্যান্ডলুম পার্কে প্রস্থান করে।এক স্থানীয় তাঁতি ভাই ফারুখ এই জত্থায় চলতে -চলতে জানান যে এখানকার তাঁতিদের সমবায় আছে এবং যে তাঁতি ভাইদের বাড়িতে তাঁত (হাত কার্ঘা) লাগানোর পর্যাপ্ত জায়গা নেই  তাদের জন্য উপযুক্ত জায়গার ব্যবস্থা তাঁরা করে দেন।উনি তাঁতিদের সমস্যা ও তাদের রোজগার সংক্রান্ত অনেক কথা বলেন৷বাস্তবে এই তাঁতিদের কাজ খুব সূক্ষ, পরিশ্রমের,ও বিপজ্জনক।এই তাঁতিরা একটি সুতোকে  নানাভাবে তানা-বানা করে  কয়েক ঘন্টার পরিশ্রমে একটি কাপড় বোনেন।কিন্তু মাঝখানে দালালদের দৌরাত্য ও সরকারের উদাসীনতার জন্য স্থায়ী রোজগারের অভাব উপযুক্ত পারিশ্রমিক পাওয়ায় বাধার সৃষ্টি করে।জত্থার সাথীরা এই তাঁতিদের সঙ্গে বিস্তৃত সংলাপের  মাধ্যমে  কবীরকে স্মরণ করেন।সত্যভামা ও কবীর “ঝিনি বিনী চদরিয়া” কবীরের গানটি পরিবেশন করেন৷সেখানে বিনীত তিওয়ারী  তাঁতিদের বলেন যে ভাবে আপনারা তানা -বানা করে সুন্দর ,রঙ্গিন ও মজবুত কাপড় বোনেন ঠিক সেই ভাবে আমাদের উচিত কারো কথায় কান না দিয়ে এই সমাজকে এক সূত্রে বেঁধে রাখতে হবে।জাতি ও ধর্ম ভুলে নিজেদের মধ্যে সম্প্রীতি রাখতে হবে।এর পরে জত্থার সাথীরা স্থানীয় লোকেদের সাথে আলোচনা করেন ।

এই সময় সত্যভামা ও কবীর রাজোরিয়া দুজনে কবীরের গান “হোশিয়ার রেহনা রে ” আর হরিরাম রাজোরিয়ার গান “চল চলা চল” গান পরিবেশন করেন। বিখ্যাত চিত্রকর পঙ্কজ দীক্ষিত যাত্রা সন্দর্ভে বলেন যে ঘৃণা দ্রুত প্রসারিত  হয় কিন্তু প্রেমের প্রসার সেই গতিতে হয় না। কিন্তু আমাদের হাল ছাড়লে হবে না ,চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে আর পরস্পর ভ্রাতৃত্ব ও সম্প্রীতির বার্তা প্রসারিত করে যেতে হবে। শিবেন্দ্র বললেন যে আমাদের মধ্যে জাতি ,ধৰ্ম ও শ্রেণীর নিরিখে ভেদাভেদ সৃষ্টি করা হয়। এটাকে দূর করার জন্যেই এই যাত্রা।

সীমা রাজোরিয়া এই যাত্রার গুরুত্ব ব্যাখ্যা করে বললেন যে লোকেদের সঙ্গে কথাবার্তার দ্বারা তাদের সংস্কৃতি ও ভাষা কে আমরা জানতে পারি। বিনীত তিওয়ারির বক্তব্য মানুষের শ্রম ও প্রেম একসাথে মিলে মিশে একাকার হয়ে আছে। এই যাত্রা শুধুমাত্র কবীর ,ভগৎ সিংহ আর মহাত্মা গান্ধীর উত্তরসূরি বা ওঁদের বাণী প্রচার  করার যাত্রা নয় বরং মানুষের শ্রমের গরিমা বজায় রাখার ও একতার যাত্রা। এই সভায় বিজয় দালাল শঙ্কর শৈলন্দরের লেখা  ” কিসি কে মুস্ককরাহাটো পর হো নিসার ” গানটি পরিবেশন করেন। অঙ্কিত শায়রী করে। এই সভার পরিচালক অংশু বলেন যে আজকের পরিস্থিতি খুবই কঠিন ও স্পর্দ্ধাপূর্ণ। ঘৃণা ভাব এই মুহূর্তে চরমে। এই পরিস্থিতির মোকাবিলা আমাদের প্রেম আর সদ্ভাবনা দিয়ে করতে হবে।

এই কথাবার্তার পর জত্থা কয়লা কুঠির দিকে অগ্রসর হয়ে প্রসিদ্ধ সংগীতকার বৈজু বাউরার সমাধি স্থলে পুষ্প অর্পণ করে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন  করে। যাত্রা শেষে জত্থার সাথীরা স্থানীয় তাঁতিদের বাড়িতে গিয়ে তাদের পরিশ্রম ও কারিগরি অবলোকন করে ও তাদের সাথে কথাবার্তা বলে।

এই জত্থায় ভারতীয় গণ নাট্য সংঘ,অশোক নগর শাখার সাংস্কৃতিক কর্মীরা ,ইন্দোরের লেখক সঙ্গীরা ,ছাতরপুরের শিল্পীদের সঙ্গে স্থানীয় সংবাদদাতা ও জনগণ যোগ দিয়েছিলেন।বিশেষ ভাবে উল্লেখনীয় সীমা রাজোরিয়া ,আফরোজ খান ,পঙ্কজ দীক্ষিত,বিনোদ শর্মা ,রতন লাল প্যাটেল ,কবীর রাজোরিয়া ,অনুপ শর্মা ,সত্যভামা রাজোরিয়া,কুশ কুমার ,নীরাজ কুশওয়াহা ,গিরিরাজ কুশওয়াহা,অভিদীপ,সর্বেশ খারে ,শিবেন্দ্র শুক্লা ,অঙ্কিত ,বিনীত তিওয়ারি , বিজয় দলা,ফারুখ মুহাম্মদ ,ভূপেন্দ্র ইত্যাদি এখানে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন।

• গিরিরাজ কুশওয়াহা  •
Spread the love
%d bloggers like this: